মাথা তুলে দাঁড়ানোর সাধ ও অস্বাভাবিক একটি তুলনা




আগামী বছরেই পশ্চিমে নাসা ড্রাগনফ্লাই ছোটাচ্ছে শনির গ্রহের চাঁদে। মংগলগ্রহের পর সেটা হতে পারে মানুষের নুতন আবাস (মংগলগ্রহ নিয়ে ইলন মাস্কের ঘোষণার প্রেক্ষিতে লিখলাম)। 

আর দক্ষিণ পূর্বে আমাদের ডিজিটাল সচ্ছলতা এখনও দূরের তারা। স্বাধীনতা, রাজনীতি, ব্যবসা, ও ধর্মের প্রশ্নগুলোতে আমরা আটকে আছি প্রায় শতাব্দী জুড়ে। 

এক গোলার্ধ ভূস্বর্গ! সেখানে চাইলেই যে কেউ মেধা শানিত করতে পারে, মানবতার সেবায় অবদান রাখতে পারে। অন্য গোলার্ধে মেধা বিকাশ দূরে থাক, অশান্তি, অনগ্রসরতা, নিরাপত্তাহীনতা এড়াতে সবার লক্ষ্য। 

এক ভূখন্ডের নখদর্পনে গোটা বিশ্ব, আরো কয়েক শতকে কি ঘটবে তাও তাদের চিন্তার বাহিরে নেই। এখন তারা মহাকাশ জয় করে চলেছে। আমাদের শিক্ষা, বাসস্থান, সুস্বাস্থ্য, কথা বলা, এমনকি স্বাধীন চিন্তা করার শক্তি ব্যাক্তি পর্যায়ে অনুপস্থিত। 

যারা ভিন্নমত সহ্য করার ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে তাদের কাছে ভিন্নমত সহনীয় থাকে না। বৈষম্য বিরাগেও সাম্য ধরে রাখা সাধ্যে কুলায় না। যারা গণতন্ত্রের তুবরি ছোটায়, তারা নিজের পরিবারে, প্রতিষ্ঠানে, সমাজে আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠা করে রাখে। 

স্বাভাবিকতার অভাবে মহান আন্দোলনগুলো আশাবিলাসী, অপূর্ণ থেকে যায়। ফলে, এই সোনার দেশ কখনো দেশের মানুষের থাকে না। আড়ালে পাল, সেন, বর্গি, বৃটিশ, এমনকি দক্ষিণ পূর্বেরই দূর স্বজাতির কোরিওগ্রাফি চলতে থাকে। 

এদেশে রাজনীতি, ব্যবসা ধর্ম মানুষের বলে জয়ী হতে চায় না। ভূস্বর্গেরও তো রাজনীতি আছে, আছে ব্যবসা এবং ধর্মীয় গোড়ামি। সেখানে জীবন পরাজিত হয় কমই। 

মানুষের বলে বলীয়ান হলে কারো দাসত্ব তো অন্তত করতে হয় না। একটা জীবন দাসত্ব করতে চায় না। মাথা উঁচু করে কি আসলেই বাঁচা যায় না। জনমঙ্গলে কি জনস্রোত পাশে রাখা যায় না। নাকি সে ইচ্ছাই কারো থাকে না! 

মন বেড়ে চলেছে। এক ভূখন্ডে মনকে বাড়তে দিতে নেই। আরেক ভূখন্ডের মনের আলোতে জীবনে অট্টহাসিতে সারা দুনিয়াকে টেনে ধরে। 

শুরুতে বলছিলাম, ড্রাগনফ্লাইয়ের কথা। এটা একটা রোবটিক রোটরক্র্যাফট। ২০২৬ সালে সে শনি গ্রহে যাত্রা শুরু করবে। আট বছর পর শনির চাঁদ টাইটানে ল্যান্ড করে ড্রাগনফ্লাই প্রাণের সম্ভাবনা খুঁজে বেড়াবে। ড্রাগনফ্লাই যেসব চোখ দিয়ে দেখবে, তাতে থাকবে বিশেষ ধরণের এক প্রলেপ। এই প্রলেপ মহাকাশের নানান প্রভাবের মধ্যেও ড্রাগনফ্লাইকে পরিষ্কার দেখতে সাহায্য করবে। 

এই প্রলেপ বা কোটিং তৈরি করছেন যে বিজ্ঞানীদের দল তাদের নেতৃত্ব আছেন একজন বাংলাদেশী প্রকৌশলী। 

আশির দশকের বাংলাদেশের কাঁচা রাস্তায় তিনি খালি পায়ে স্কুলে গেছেন, হারিকেনের আলোয় পড়াশোনা করেছেন। পরে আমেরিকায় পাড়ি দিয়ে মেধার বিকাশ ঘটিয়েছেন। 

আমেরিকা তার সম্ভাবনা টের পেয়ে কোন জাতপাত দেখেনি, তার মতাদর্শেরও তোয়াক্কা করেনি, মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার লুটিয়ে দিয়েছে এই বাঙালি মেধার পায়। 

আর তিনি শুধু ড্রাগনফ্লাইয়ের প্রলেপ নয়, গত এক যুগ ধরে তার কর্ম মানবতার জন্য একের পর এক অবদান রেখে চলেছে। পৃথিবী ছেড়ে মহাশুন্যে পৌঁছেছে তার কীর্তি।




Comments

Popular posts from this blog

Smugglers-BDR Affair on Barendra Express

Jessore GOC, pilot killed in chopper crash