দারিদ্র্য, বাল্যবিয়ে, নির্যাতন, কিছুই দমাতে পারেনি যাকে





রাজশাহীর শিউলি আক্তারের বিয়ে হয় আজ থেকে ১৩ বছর আগে যখন তিনি চারঘাট উপজেলার সরদহ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী।

উচ্চশিক্ষা অর্জনের স্বপ্নে গোড়াতেই বাধা হয়ে দাঁড়ায় বাল্যবিয়ে।

পরিবারের অসহনীয় দারিদ্র্যের কারণে মেয়েকে বিয়ে দেন বাবা। কিন্তু বিয়ের পর সুখ জোটেনি শিউলির কপালে।

তাকে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়।

বলা হয়েছিল, হয় শ্বশুরবাড়ি নয়তো লেখাপড়া যে কোনো একটা বেছে নিতে হবে। শিউলি পরেরটিই বেছে নিয়েছিলেন।

দারিদ্র্য, বাল্যবিবাহ এবং নির্যাতনের সব বাধা অতিক্রম করে শিউলি এ বছর জানুয়ারি মাসে রাজশাহীর বারিন্দ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি নিয়ে চিকিৎসক হয়েছেন।

সম্প্রতি তার কলেজে ও বাসায় এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে শিউলি জানান তার জীবনের লড়াইয়ের গল্প।

সরদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ জন্মেছিল। তখনও তার পরিবারের কোনো দূরবর্তী সদস্যও স্কুলের গন্ডি পার হতে পারেনি।

'আমি স্কুলে পড়া ছেলেমেয়েদের এবং তাদের কথা বলা, চরাফেরার ধরন দেখতাম। আমি তাদের মতো পড়তে চেয়েছিলাম।'

শিউলি শুনেছিল যে শুধুমাত্র সবচেয়ে মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা সরদহ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। ওই স্কুলে পড়ার জন্য তাই মাকে খুব করে ধরেছিল শিউলি।

মেয়েকে নিয়ে একজন প্রাইভেট টিউটরের কাছে গিয়েছিলেন মা। শুনেছিলেন তার কাছে পড়লে মেয়ে ওই সরকারী স্কুলে ভর্তি হতে পারবে।

'আমি দেখলাম প্রাইভেট টিউটর আমার মাকে বসার জন্য একটি ভাঙা চেয়ার এগিয়ে দিলেন আর বারান্দা থেকেই কথা বলে মা চলে এসেছিল,' বলেন শিউলি।

ঘরে ছিল অবর্ণনীয় অভাব। বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন একটি চায়ের দোকানে কাজ করতেন। সামান্য যা আয় ছিল তা দিয়ে সাত জনের পরিবারের সংসার চলত না।

'তখন এক কেজি ময়দা আর একটা খাতার দাম ছিল ১০ টাকা করে। আমরা যদি ময়দা কিনতাম, তাহলে আমার পড়ালেখা হতো না, আর খাতা কিনলে বাড়িশুদ্ধ লোক না খেয়ে থাকত। কিন্ত আমার মা লেখাপড়ায় আমার আগ্রহ দেখে আমাকে খাতা কিনে দিয়েছেন,' বলেন শিউলি।

পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে শিউলি যখন বৃত্তি পেল তখন শিক্ষকেরা তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন।

কিন্তু খারাপ সময় তো পিছু ছাড়ে না।

২০০৯ সালে যখন শিউলি নবম শ্রেণির দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা দিচ্ছে, এক রাতে হঠাৎ শোনে তার বিয়ে। বাল্ব বিক্রেতা রাশিদুল ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়ে যায়।

' সেদিন আমি অনেক কেঁদেছিলাম। কিন্তু দেখলাম আমার স্বামী আমার প্রতি সদয় ছিলেন,' তিনি বলেন।

শিউলি ভেবেছিল তার শ্বশুরবাড়িতে তার অন্তত খাবারের চিন্তা আর করতে হবে না।

কিন্তু শুরু থেকেই তার লেখাপড়ার বিরোধিতা করে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। তিন বেলার খাবার আর থাকার জায়গা দিতে পড়াশোনা ছাড়তে বলে তারা।

'আমার শ্বশুর-শাশুড়ি আমাকে একটি বেছে নিতে বলেছিলেন। হয় আমি আমার পড়াশোনা বন্ধ করব নয়তো আমাদেরকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে। আমার স্বামী আমাকে নিয়ে তার বাবার বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন।'

'তখন আমার স্বামীর মাসিক আয় ছিল মাত্র ১৫০০ টাকা, আর তিনি একটা বাড়ি ঠিক করেন যার মাসিক ভাড়া ছিল ১২০০ টাকা,' বলেন শিউলি।

শিউলি রাজশাহী শহরে তাদের মেহেরচন্ডীর ভাড়া বাড়িতে বসে এই কথা বলছিলেন। সেখানে এখন তাদের একমাত্র ছেলেকে নিয়ে তারা থাকেন।

২০১৩ সালে এইচএসসি পাস করার পর, বরেন্দ্র মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শামসুদ্দিন তাকে কলেজে বিনামূল্যে পড়াশোনা এবং তার স্বামীকে হাসপাতালে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন।



যোগাযোগ করা হলে, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলমের বাবা মো. শামসুদ্দিন বলেন, তার ছেলেই শিউলির শিক্ষার জন্য অর্থায়ন করেছে এবং শিউলি ৩০ জন সুবিধাভোগীর একজন।



An utter tragedy struck 13 years ago. Still only a ninth-grader, Rajshahi's Sheuli Akter was married off owing to her family's unimaginable struggle with poverty.

It only got worse. Soon after her marriage, she was ousted from her in-laws' house, as she was made to choose between them or her education. Persistent and full of grit, she chose the latter.

At that time, both a kilo of flour and a notebook cost Tk 10. If we bought flour, my education would have been hindered, so my mother chose to buy notebooks over our bread.
Sheuli Akter

Her hardship eventually bore fruit as Sheuli, overcoming all barriers of poverty, child marriage, and abuse, became a doctor by achieving an MBBS from Barind Medical College in Rajshahi in January.

Talking to this correspondent, Sheuli said she developed her enthusiasm for education during her time at Sardaha Government Primary School. "I was fond of watching boys and girls studying at school and the way they spoke. I wanted to be just like them."

Sheuli learned that only the brightest students studied at the school and insisted her mother enrolled her there. Her mother soon took her to a private tutor.

"I noticed the private tutor offered my mother a broken chair to sit on and treated her differently than others. I don't know how she made him agree to teach me," Sheuli said.

Sheuli's father, Zahangir Hossain, could barely afford his family of seven earning a meagre sum from a tea stall.

"At that time, both a kilo of flour and a notebook cost Tk 10. If we bought flour, my education would have been hindered, so my mother chose to buy notebooks over our bread."

She caught the attention of her teachers when she obtained a stipend in fifth and eighth grades.

Yet her father married her off to Rashidul Islam, a bulb seller, in 2009 when she was appearing for the ninth-grade second term examination. "I cried a lot. But later realised that my husband was kind towards me," she said.

She thought the food crisis would be over at her in-laws' house. But they opposed her education from the start and wagered her access to food if she continued.

"They gave us a choice, either I stop my education or we leave their house. My husband took me out of his parents' house to support me," she told this correspondent, sitting at their rented house in the city's Meherchandi, where they live with their only son.

After she passed HSC in 2013, Md Shamsuddin, managing director of Barind Medical College, offered her free education at the college and her husband a job at the hospital.

Contacted, Md Shamsuddin, father of state minister for foreign affairs Mohammad Shahriar Alam, said his son had financed her education, with Sheuli being one of 30 beneficiaries.

https://www.thedailystar.net/youth/young-icons/news/wont-back-down-no-matter-the-cost-2954691


Comments

Popular posts from this blog

Smugglers-BDR Affair on Barendra Express

Jessore GOC, pilot killed in chopper crash