যে কারণে রাজশাহীতে মুরাদ-নাহিদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা খারিজ
সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান ও মহিউদ্দিন হেলাল নাহিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল।
গতকাল রোববার বিএনপির বগুড়া জেলা শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক একেএম সাইফুল ইসলাম মামলাটি দায়ের করেন।
ট্রাইব্যুনালের বিচারক জিয়াউর রহমান মামলাটি খারিজ করার আগে মামলার আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের ৩টি পর্যবেক্ষণ বর্ণনা করেন বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর ইসমত আরা।
তিনি বলেন, 'এই সিদ্ধান্তে আসার আগে বিচারক আবেদনকারীর বক্তব্য রেকর্ড করেছেন, একটি ভিডিও ক্লিপ দেখেছেন, আদালতে দেওয়া মামলার অন্যান্য নথি এবং আইনজীবীদের কথা শুনেছেন।'
পাবলিক প্রসিকিউটর দ্য ডেইলি স্টারকে ট্রাইব্যুনালের পর্যবেক্ষণগুলো বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।
ইসমত আরা বলেন, প্রথমত বিচারক দেখেছেন যে মামলার আবেদনকারীর কোনো 'লোকাস স্ট্যান্ডি' নেই। যার অর্থ এই মামলা দায়ের করার কোনও অধিকার বা ক্ষমতা তার নেই।
আবেদনকারী সাইফুল ইসলাম তার রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে মামলাটি দায়ের করেন। তবে ভিডিও ক্লিপে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মন্তব্য রাজনৈতিক নয় দেখা গেছে।
'মন্তব্যটি ব্যক্তিগত আলাপের সময় উঠে এসেছে... এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাক্তির প্রতিকার চেয়ে মামলা করার অধিকার আছে,' বলে আদালতের আদেশের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন তিনি।
'দ্বিতীয়ত বিচারক পর্যবেক্ষণ করেছেন যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশংকা অবশ্যই শুধু আইন প্রয়োগকারী সংস্থা করতে পারে। ব্যক্তিগত কোনো পক্ষ নয়।'
'আবেদনকারী তার মামলার বর্ণনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু অপরাধের সংঘঠনের পর মামলা দায়েরের দিন পর্যন্ত ১৩ দিন অতিবাহিত হলেও কোনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির ঘটনার উল্লেখ করেননি।'
'বিচারকের তৃতীয় পর্যবেক্ষণ, মামলা দায়ের করা ছিল একটা "অপকৌশল", যা মেনে নেওয়া উচিত নয়।'
আদালত সংবাদপত্র থেকে জানতে পেরেছে যে এই আইনের অধীনে একই ঘটনায় একই ব্যক্তিদের আসামি করে খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রাম এবং ঢাকায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আদালতের আদেশের উদ্ধৃতি দিয়ে ইসমত আরা বলেন, 'একই ইস্যুতে একাধিক মামলা দায়ের করা এবং একাধিক জেলায় একই ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা অবশ্যই আইনের লঙ্ঘন। এই ধরনের কর্মকান্ড জনগণের অর্থ এবং সময়ের ক্ষতি করবে এবং আইনি ব্যবস্থার অপব্যবহার করবে।'
একটি ফেসবুক লাইভে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় ক্ষুব্ধ হয়ে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল।
মামলার আবেদনকারী এ কে এম সাইফুল ইসলাম জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের বগুড়া জেলা শাখার উপদেষ্টা।
মামলায় তিনি মুরাদ হাসান ও টকশো উপস্থাপক মহিউদ্দিন হেলালকে আসামি করেন।
Comments
Post a Comment