রুয়েটের গাছ কাটা স্থগিত, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিকে জিজ্ঞাসাবাদ
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসের গাছ কাটা কার্যক্রম স্থগিত করেছে। সেই সঙ্গে উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক অমিত রায় চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্য ডেইলি স্টার'র একটি প্রতিবেদন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে রুয়েট কর্তৃপক্ষ গাছ কাটার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। গতকালই গাছ কাটা স্থগিত করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ দেখেছে, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বন বিভাগের প্রয়োজনীয় অনুমতি ছাড়াই গাছগুলো কাটা হচ্ছিল। রুয়েট কর্তৃপক্ষ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালককে তিন দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে বলে, যার মাধ্যমে তারা গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেয়।
রুয়েটের রেজিস্ট্রার মো. সেলিম হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা বিষয়টি তদন্তের জন্য কোনো কমিটি গঠন করিনি। কারণ সব কিছু আমাদের চোখের সামনে ঘটছে। রুয়েটের শীর্ষ কর্মকর্তারা উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক অমিত রায় চৌধুরীকে কিছু জবাবদিহিতার জন্য ভিসির কার্যালয়ে ডেকেছিলেন। তাকে গাছ কাটার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতিপত্র দেখাতে বলা হয়েছিল, তিনি তা দেখাতে পারেননি।'
'প্রকল্প পরিচালক গত বছরের ১৫ মার্চ পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে অনুমতি চেয়ে দেওয়া নথির অনুলিপি উপস্থাপন করেছেন। বন বিভাগের গাছের মূল্যায়ন প্রতিবেদনের অনুলিপি দিতেও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে, আমরা গাছ কাটা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি'— বলেন সেলিম হোসেন।
তিনি আরও বলেন, 'যদিও প্রশাসনিক ভবনটি নির্মাণের জন্য বেশির ভাগ গাছ ইতোমধ্যে কেটে ফেলা হয়েছে। আর গাছ কাটার দরকারও নেই।'
অমিত রায় চৌধুরীর কাছে গাছ বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি রুয়েট কর্তৃপক্ষকে বলেন, গাছ বিক্রির জন্য ৩ বার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। কেউ সাড়া না দেওয়ায় রুয়েট কর্মচারীর কাছে গাছ বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
যে কর্মচারী গাছ কিনেছেন তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে রুয়েট কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, কেউ যদি তার চেয়ে বেশি মূল্যে গাছগুলো কিনতে আগ্রহী হন, তবে তিনি গাছের উপর তার অধিকার ছেড়ে দিতে প্রস্তুত।
রাজশাহীর ডিওইর ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রুয়েট কর্তৃপক্ষের অনুমতি চাওয়ার কোনো তথ্য নেই। রুয়েট কখনোই আমাদের কাছে আবেদন করেনি। যদি তারা আবেদন করেও, আমরা কাউকে কোনো গাছ কাটতে দেবো না।'
রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আহমেদ নিয়ামুর রহমান বলেন, রুয়েটের কর্মকর্তারা গতকাল তার সঙ্গে ফোনে কথা বলে জানিয়েছিলেন যে তারা শিগগির মূল্যায়নের জন্য আবেদন করবেন।
রুয়েট কর্মকর্তাদের দাবি, তারা ই-মেইলে আবেদন করেছিলেন। তবে নিয়ামুর রহমান জানিয়েছেন, তিনি কোনো ই-মেইল পাননি।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আরও বলেন, বন বিভাগ গাছের মূল্যায়ন করে এবং মূল্যায়নকৃত মূল্যের নিচে কোনো কর্তৃপক্ষ গাছ বিক্রি করতে পারে না।
Comments
Post a Comment